বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়


মো. মিজানুর রহমান, শিক্ষক
পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়
সৃজনশীল
পত্রিকার শিরোনামে জেরিন  একটি দেশের দাঙ্গার খবর পড়ছে।  পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠা জুড়ে ছিল  হত্যা , ভাংচুর , লুটপাট আর বিশৃঙ্খলার বীভত্স চিত্র । এসব দেখে জেরিনের মনে হলো  এরা আমাদের কী সভ্যতা শিখিয়েছে ? এরা তো জোর করে আমাদের শাসন করেছিল। তারা আমাদের ভারতবর্ষ থেকে পুিঁজ পাচার আর শোষণ নিপীড়নে মেতে উঠেছিল।  তারা মুরুব্বি সেজে আমাদের সভ্যতা শেখাতে চেয়েছিল ।  জেরিনের বারবার মনে হয়, তারা সম্পদের যে প্রার্চুয গড়ে তুলেছে  তা আমাদের দেশ থেকে নেয়া ।
ক.‘দি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া’ কোম্পানি কত সালে স্থাপিত হয় ?
খ.মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার কারণ কী?
গ.উদ্দীপকে জেরিন কাদের শাসনের কথা বলতে চেয়েছে ? তাদের শাসনব্যবস্থা ব্যাখ্যা করো ।
ঘ.উদ্দীপকে জেরিনের  দৃষ্টিতে যে শাসন ব্যবস্থার কথা ফুটে উঠেছে ইতিহাসে তাদের পরিণতি কী হয়েছে ? তা বিশ্লেষণ করো 
উত্তর:ক. ‘দি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া’কোম্পানি স্থাপিত হয় ১৬০০ সালে ।
খ. মুসলমানরা শিক্ষা , চাকরিসহ বিভিন্ন মৌলিক দাবি দাওয়া আদায়ে  দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিল । ফলে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার হয় । এরই ধারাবাহিকতায় মুসলমানদের রাজনৈতিক দাবি- দাওয়া ও অধিকার ইংরেজ শাসকদের কাছে তুলে ধরার জন্য ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
গ. উদ্দীপকে জেরিন ব্রিটিশ বেনিয়াদের শাসনের কথা বলতে চেয়েছে । তার বক্তব্যে ভারতীয় উপমহাদেশে  ব্রিটিশদের শাসন- শোষণ, জুলুম- নির্যাতন আর সম্পদ লুণ্ঠনের ইতিহাস ব্যক্ত হয়েছে ।  ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন  নবাব সিরাজউদ্দৌলার পলাশীর যুদ্ধে পরাজয় ও মর্মান্তিক মৃত্যু  এবং ইংরেজদের বিজয়ের মধ্য দিয়ে   এদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।  তারা দুশ বছর ধরে এ দেশের মানুষকে পরাজিত করে রেখেছিলো ।  তারা সভ্য জাতি হিসেবে নিজেদেরকে ভাবতো ।  তাই তারা আমাদের সভ্যতা শিখিয়েছে । অথচ সভ্যতার নামে চরম অসভ্য আচরণ করেছে  তারা এ দেশবাসীর ওপর । এ দেশের কামার- কুমার, কৃষক , জেলে , তাঁতি  আর খেটে খাওয়া মানুষদের  রক্ত পানি করা  সম্পদ তারা মুনাফা হিসেবে গ্রহণ করেছিল । ইংরেজরা এ দেশে প্রজাদের ওপর অতিরিক্ত  করের বোঝা চাপিয়ে  তা আদায়ে প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে ।  অথচ এ দেশ থেকে সম্পদ পাচার করে নিজ দেশে সম্পদের প্রাচুর্য তৈরী করেছিল। ইংরেজ শাসনের মূল উদ্দেশ্য ছিল এ দেশের সম্পদ পাচার ।
ঘ.উদ্দীপকে জেরিনের দৃষ্টিতে  ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার কথা ফুটে উঠেছে। শেষ পর্যন্ত এ  দেশে ব্রিটিশদের পরিণতি ভালো হয়নি । এ দেশের স্বাধীনচেতা মানুষ তাদের অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছে ।  তাদের অন্যায়ের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছে। ফলে তারা এ দেশ থেকে পরাজিত হয়ে বিতাড়িত হয়েছিল। দুশ বছরের ব্রিটিশ শাসন-শোষণ আর নির্যাতনের শিকার হয়ে  এ দেশের মানুষ সচেতন হয়ে উঠেছিল । হিন্দু- মুসলমান দল মত নির্ির্বশেষে বুঝতে পেরেছিল ব্রিটিশরা আমাদের শত্রু।  তাদের হাতে আমাদের জীবন ও দেশের সম্পদ নিরাপদ নয়। ফলে সিপাহী বিদ্রোহ,  অসহযোগ আন্দোলন ,  নীল বিদ্রোহসহ  তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। চালানো হয় তাদের বিরুদ্ধে গুপ্তহত্যা , সশস্ত্র  যুদ্ধবিগ্রহ ।  রাজনৈতিক দল গঠন ও আন্দোলনের মাধ্যমে  এ দেশের মানুষ রাজনৈতিক সচেতন হয়ে ওঠে ।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »