পাপিয়া বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখি। গ্রীষ্মকালে দেশের সব গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়। শীতকালে পূর্ব আফ্রিকায় থাকে। আফ্রিকার বেশির ভাগ অঞ্চল ও দক্ষিণ এশিয়ায় এদের বিস্তৃতি রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়া মহাদেশের পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ইরান, আফগানিস্তান ও মিয়ানমারে পাওয়া যায়। পাপিয়া বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বাংলাদেশের বন্য প্রাণী আইনে এই পাখি সংরক্ষিত।
পাপিয়া বন, আবাদি জমি, গাছপালায় পরিপূর্ণ এলাকা, বাগানে বিচরণ করে। সাধারণত একা বা জোড়ায় দেখা যায়। মাঝে মাঝে ৬-৮টি পাখির ছোট দলেও থাকতে দেখা যায়। ঘন পাতা ঘেরা গাছে, ঝোপে লুকিয়ে খাবার খায়। খাবারের মধ্যে শুঁয়োপোকা, উইপোকা, পিঁপড়া ইত্যাদি এদের পছন্দ। জুন থেকে আগস্ট মাসে এরা প্রজনন করে। প্রজননকালে পুরুষ পাখি পিউ-পিউ-পিইউ বলে সুমধুর সুরে ডাকে। পুরুষের সুরেলা কণ্ঠে মেয়ে পাখি আকৃষ্ট হয়ে জোড়া বাঁধে। পাপিয়া বাসা তৈরি, ডিমে তা ও ছানাদের পরিচর্যা করে না। ছোট পাখি বা ছাতারে পাখির বাসায় মেয়ে পাখি একটি ডিম দিয়ে উধাও হয়ে যায়। ছাতারের ডিমের রঙের সঙ্গে মিল থাকায় পালকমাতা ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। ছাতারের ছানাদের সঙ্গে পাপিয়ার ছানা দিন দিন বড় হয়ে একদিন বাসা ছেড়ে উড়ে চলে যায়।
বাংলাদেশে খয়েরি ডানা, বউ কথা কও, করুন, পাকরা পাপিয়াসহ মোট ১২ জাতের পাপিয়া আছে। খয়েরি ডানা পাপিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় জাতের পাখি। খয়েরি ডানা পাপিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম Clamator coromandus।
গ্রামাঞ্চলের ছায়াঘেরা ঘন ঝোপে লুকিয়ে ঘুরে বেড়ানো পাপিয়ার আরেকটি জাতের নাম করুন পাপিয়া। এই জাতের পাপিয়া আকারে ছোট। এর ইংরেজি নাম Plaintive Cuckoo এবং বৈজ্ঞানিক নাম Cacomantis merulinus। এরা গাছের আড়ালে বসে স্পষ্ট ও সুমধুর সুরে শিস দেয়।
Source: kalerkantho.com
EmoticonEmoticon