২০১৬ সালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার প্রস্তুতি

বাংলা প্রথম পত্র কবিতা : বাঙালির বাংলা

মো: মাছুদুল আমীন শাহীন অধ্যক্ষ, শাহীন ক্যাডেট স্কুল, টাঙ্গাইল

সুপ্রিয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। 

আজ তোমাদের বাংলা প্রথম পত্রের ‘কবিতা : বাঙালির বাংলা’ থেকে একটি নমুনা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো। 


উদ্ধৃতিটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা;
তাহার মাঝে আছে দেশ একÑ সকল দেশের সেরা;
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা;
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,
সকল দেশের রানি সে যেÑ আমার জন্মভূমি।
প্রশ্ন : ক) সত্ত্বগুণের প্রধান শত্র“ কোনটি? 
খ) ‘বাংলা সর্ব ঐশীশক্তির পীঠস্থান’ প্রবন্ধের যে দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা করো। 
গ) উদ্দীপকটি ‘বাঙালির বাংলা’ প্রবন্ধের যে দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা করো। 
ঘ) উদ্দীপকের বক্তব্য বিষয় উপস্থাপনই কি কাজী নজরুল ইসলামের মূল ল্য? ‘বাঙালির বাংলা’ প্রবন্ধের আলোকে যুক্তি দাও। 
উত্তর : ক) তমোগুণ।
খ) ‘বাংলা সর্ব ঐশী শক্তির পীঠস্থান’ বলতে বোঝানো হয়েছে যে, ঐশ্বরিক শক্তির সাধনায় বাংলা অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থান।
বাংলার মাটিতে যুগে যুগে নানা ধর্মমতের উদ্ভব ঘটেছে। বাইরে থেকেও আগমন ঘটেছে নানা ধর্ম প্রচারকের। তাদের ধর্মসাধনা ও প্রচারের দিকটি বাংলার ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে। এখানে তপস্যা করে অনেক মুনি-ঋষি ও পীর-আউলিয়া-দরবেশ সিদ্ধি লাভ করেছেন। এভাবে নানান ঐশী শক্তির সমাবেশ ঘটেছে বাংলার।
গ) উদ্দীপকটি ‘বাঙালির বাংলা’ প্রবন্ধে বর্ণিত প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ বাংলার ছবির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বাংলাদেশ তথা আমাদের এই বাংলা প্রকৃতির অকৃপণ দানে ভরপুর এক ভূখণ্ড। নদীমাতৃক এ দেশের মাটিতে সোনার ফসল ফলে। মৎস্য সম্পদ থেকে খনিজ সম্পদÑ সব দিক থেকে এ দেশ ঐশ্বর্যশালী।
আলোচ্য প্রবন্ধের মতো উদ্দীপকেও স্বদেশের চিত্র বর্ণিত হয়েছে। আমাদের এই বসুন্ধরার মাঝে বাংলাদেশ এক অনন্য সৌন্দর্যের আধার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে উদ্দীপকে। স্বপ্নের দেশের মতো সুন্দর এ বাংলায় প্রকৃতি আপন হাতে রঙ ছড়িয়েছে। প্রকৃতির লীলা নিকেতন এই বাংলার মোহময় রূপের কথাই উদ্দীপকের চরণে চরণে পরিস্ফুট। তা ছাড়া সৌন্দর্যের বিচারে বাংলাকে উল্লেখ করা হয়েছে সব দেশের রানী হিসেবে। বাঙালির বাংলা প্রবন্ধেরও একটি বড় অংশ জুড়ে বাংলার এই সৌন্দর্য ও সম্পদের বর্ণনা আছে। উদ্দীপকে প্রবন্ধের সে দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ) উদ্দীপকের বক্তব্য বিষয় কাজী নজরুল ইসলামের ‘বাঙালির বাংলা’ প্রবন্ধে থাকলেও এটিই তার মূল ল্য নয়।
উদ্দীপকে মূলত বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা এবং তা নিয়ে গর্বের কথা আছে। আর কাজী নজরুল ইসলামের প্রবন্ধে বাঙালির জেগে ওঠা প্রসঙ্গে বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা আংশিকভাবে এসেছে।
স্বদেশকে নিয়ে গর্বের কথা উদ্দীপক ও আলোচ্য প্রবন্ধে রয়েছে। কিন্তু প্রবন্ধে নজরুলের বক্তব্য আরো গভীর ভাবনায় সমৃদ্ধ। এতসব সম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও বাঙালির দুরবস্থার চিত্র তিনি দেখিয়েছেন। সেখান থেকে উত্তরণ চেয়েছেন।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার বাংলার বর্ণনা দিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম দেখিয়েছেন, যুগে যুগে কত বিদেশী আমাদের দেশ দখলে নিয়েছে। কিন্তু আমরা কোনো প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করিনি। আমাদের জেগে উঠতে হবে। বাংলার অধিকার নিজেদের হাতে নিতে হবেÑ এটাই কবির কামনা। কিন্তু উদ্দীপকের কবির ভাবনা বাংলার প্রশংসাগীতেই সীমাবদ্ধ। ফলে উদ্দীপকের বক্তব্য বিষয়টি কাজী নজরুল ইসলামের পুরো প্রবন্ধকে তুলে ধরে না।

মো: মাছুদুল আমীন শাহীন 
অধ্যক্ষ, 
শাহীন ক্যাডেট স্কুল, টাঙ্গাইল

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »