নবম ও দশম শ্রেণি : অর্থনীতি

নবম ও দশম শ্রেণি : অর্থনীতি

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

তাহেরা খানম,সহকারী শিক্ষক,মিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মিরপুর, ঢাকা

চতুর্থ অধ্যায় : উৎপাদন ও সংগঠন



১।       উৎপাদন বলতে কী বোঝো?

            উত্তর : উৎপাদন বলতে মূলত উপযোগ সৃষ্টি করাকে বোঝায়।

            উৎপাদিত দ্রব্যের বিনিময় মূল্য থাকতে হবে। আবার উপযোগ সৃষ্টি না হলে উৎপাদন বোঝায় না। উপকরণ বা প্রাথমিক দ্রব্য ব্যবহার করে নতুন কোনো দ্রব্য বা উপযোগ সৃষ্টি করাকে উৎপাদন বলে। যেমন—আটা, লবণ, পানি, বেলুন ইত্যাদি ব্যবহার করে রুটি বানানো হয়। রুটি একটি উৎপাদিত নতুন দ্রব্য। রুটি খেয়ে আমরা ক্ষুধা নিবারণ করি বা তৃপ্তি পাই। অর্থাৎ রুটি তৈরি করে উপযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।



২।       উৎপাদক কাকে বলা হয়?

            উত্তর : উপকরণ সংগ্রহ থেকে বাজারে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সব কাজ তদারককারীকে উৎপাদক বলা হয়।

            উৎপাদক ব্যক্তিও হতে পারে আবার সংগঠনও হতে পারে। যেমন—কী উপকরণ লাগবে, কোথা থেকে উপকরণ আনবে, কে আনবে, কে লবণ, আটা, পানি মিশিয়ে খামির  তৈরি করবে, কে রুটি বেলবে, কে সেঁকবে, কে বাজারে নেবে, কত দামে বিক্রি করবে—এ সবই যিনি বা যে সংগঠন তদারকি করে, তাকে উৎপাদক বলা হয়।



৩।      রূপগত উৎপাদন বলতে কী বোঝায়?

            উত্তর : দ্রব্যের রূপ পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন দ্রব্য উৎপাদন করাকে রূপগত উৎপাদন বলে। যেমন—এক বা একাধিক খণ্ড কাঠকে সুবিধামতো পরিবর্তন করে খাট, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি বানানো হয়। এখানে খাট, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি হলো রূপগত উৎপাদন।



৪।       স্থানগত উৎপাদন বলতে কী বোঝায়?

            উত্তর : যে দ্রব্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করলে উপযোগ বৃদ্ধি পায়, তাকে স্থানগত উৎপাদন বলে।

            কোনো কোনো দ্রব্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করলে তার উপযোগ বাড়ে। যেমন—বনের কাঠ সাধারণত বনের আশপাশের লোকজন খড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। শহরে আনলে মানুষ এই কাঠ দিয়ে আকর্ষণীয় আসবাবপত্র বানাতে পারে। ফলে এর উপযোগ বাড়ে। আবার বনে ফুলের তেমন কদর নেই। কিন্তু সেই ফুলসহ গাছ শহরের বাড়ির আঙিনায় রাখলে এর কদর বাড়ে অর্থাৎ উপযোগ বাড়ে।



৫।       সময়গত উৎপাদন বলতে কী বোঝায়?

            উত্তর : সময়ের ব্যবধানে যেসব  জিনিসের উৎপাদন ও উপযোগ বাড়ে, তাকে সময়গত উৎপাদন বলে।

            সময়ের ব্যবধানে অনেক জিনিসের উৎপাদন ও উপযোগ বাড়ে। যেমন পৌষ-মাঘ মাসে ধানের মৌসুমে ফলন বেশি হয়। আবার এ সময়ে ধানের দাম কম থাকে। এ সময় ধান মজুদ করে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে বিক্রি করলে বেশি দাম পাওয়া যায়। সময়ের ব্যবধানে এসব জিনিসের উৎপাদন ও উপযোগ বাড়েছে।



৬।      সেবাগত উৎপাদন বলতে কী বোঝায়?

            উত্তর : মানুষ তার সেবা দ্বারা যে উৎপাদন সৃষ্টি করে, তাকে সেবাগত উৎপাদন বলে। যেমন—শিক্ষক শিক্ষাদান করে শিক্ষিত মানুষ তৈরি করেন, ডাক্তার চিকিৎসা দিয়ে মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখেন বা উৎপাদন ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখেন বা বৃদ্ধি করেন। এগুলোকে সেবাগত উৎপাদন বলে।



৭।       মালিকানাগত উৎপাদন বলতে কী বোঝায়?

            উত্তর : অর্থনৈতিক দ্রব্য ও সেবার মালিকানা পরিবর্তন করে অতিরিক্ত উৎপাদন সৃষ্টি করাকে মালিকানাগত উৎপাদন বলে।

            কোনো কোনো অর্থনৈতিক দ্রব্য ও সেবার মালিকানা পরিবর্তন করে অতিরিক্ত উৎপাদন সৃষ্টি করা যায়। যেমন—অব্যবহৃত জমি কিনে একজন কৃষক চাষাবাদ করে উৎপাদন করতে পারে অথবা ব্যবহৃত জমি কিনে ভালোভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়াতে পারে।



৮।      উৎপাদনের উপকরণ বলতে কী বোঝো?

            উত্তর : কোনো কিছু উৎপাদনের জন্য যেসব দ্রব্য বা সেবাকর্ম প্রয়োজন হয়, সেগুলোকে উৎপাদনের উপকরণ বলে। যেমন—কৃষকের ধান উৎপাদন করতে জমি, বীজ, সার, লাঙ্গল, সেচ, শ্রমিক ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। আবার শিল্পপণ্যের জন্য কারখানা, বিল্ডিং, কাপড়, সুতা, মেশিন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ময়দা, চিনি,  তেল, শ্রমিক ইত্যাদি লাগে। এসব দ্রব্যসমগ্রী উৎপাদন করতে আবার প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন—মাটি, মাটির উর্বরা শক্তি, আলো-বাতাস, পরিবেশ, খনিজদ্রব্য, সূর্য কিরণ, পানি, আরো অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়। এখানে যেসব দ্রব্যের কথা বলা হলো এগুলো সবই উৎপাদনের উপকরণ।



৯।       সংগঠন কী?

            উত্তর : কোনো কাজ করতে যে প্রতিষ্ঠান সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করে, তাকে সংগঠন বলে।

            উৎপাদন ক্ষেত্রে ভূমি, শ্রম, মূলধন ইত্যাদি উপকরণের মধ্যে উপযুক্ত সমন্বয় ঘটিয়ে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করাকে সংগঠন বলে। সমন্বয় ঘটানো এবং কাজ পরিচালনাকে ব্যবস্থাপনাও বলা হয়। এ কাজটি যে ব্যক্তি সম্পাদন করে থাকেন তাঁকে সংগঠক বা উদ্যোক্তা বলে। তাই উদ্যোক্তার বিভিন্ন কাজ, যেমন—কোনো কিছু উৎপাদনের পরিকল্পনা প্রণয়ন, ভূমি, শ্রম, মূলধন, একত্রীকরণ ও তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন কাজ পরিচালনা—এ সবই সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত।



১০।    ভূমি কী?

            উত্তর : উৎপাদনে সাহায্য করে এমন সব প্রাকৃতিক সম্পদকে ভূমি বলে। জমি, মাটি, মাটির উর্বরা শক্তি, খনিজদ্রব্য, বনজ ও জলজ সম্পদ, সূর্য কিরণ, বৃষ্টিপাত, আবহাওয়া প্রভৃতি সব রকম প্রাকৃতিক সম্পদ ভূমির অন্তর্ভুক্ত।



১১।     শ্রম বলতে কী বোঝায়?

            উত্তর : উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত মানুষের সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমকে শ্রম বলে।

            উৎপাদনের চাষি, জেলে, কামার, কুমার, তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকের কায়িক পরিশ্রমকে শ্রম বলে। আবার অফিস-আদলতের কর্মচারী-কর্মকর্তার শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমকেও শ্রম বলা হয়। একইভাবে শিক্ষকের শিক্ষাদান, ডাক্তারের সেবা ও উকিলের পরামর্শ এক ধরনের শ্রম।



১২।     মূলধন কী?

            উত্তর : মূলধন হলো মানুষ কর্তৃক উৎপাদিত একমাত্র উৎপাদনের উপকরণ। এই উৎপাদিত উপকরণ মানুষ ভোগ না করে নতুন দ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহার করে। যেমন—যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, কারখানা, অফিসের আসবাবপত্র প্রভৃতি।



১৩।    ভালো সংগঠনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

            উত্তর : ভালো সংগঠনের দুটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

            ১. সংগঠনের প্রথম ধাপে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য কী হবে তা নির্ধারণ করতে হয়। ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি অনুসারে ব্যবসায়ের সাংগঠনিক রূপ তৈরি করতে হয়। এই উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে কোনটি মুখ্য, কোনটি গৌণ, কোনটি স্বল্পমেয়াদি এবং কোনটি দীর্ঘমেয়াদি তা নির্ধারণ করে নিতে হয়।

            ২. ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি ঠিকমতো নির্ধারণ করার পর ব্যবসায়ের সমগ্র কার্যাবলি বিশ্লেষণ করা হয়। যেমন—উৎপাদন, ক্রয়-বিক্রয়, অর্থসংস্থান, শ্রমিক-কর্মী নিয়োগ, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক প্রভৃতি। সে জন্য প্রয়োজন হয় হিসাবরক্ষণ, বিজ্ঞাপন ও প্রচার, পণ্য মজুদ ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।



১৪।     মোট উৎপাদন বলতে কী বোঝায়?

            উত্তর : বিভিন্ন উপকরণ নিয়োগের দ্বারা যে উৎপাদন পাওয়া যায়, তাকে মোট উৎপাদন বলে।

            যেমন—কমল বাবু তাঁর এক বিঘা জমিতে ১০ জন শ্রমিক নিয়োগ করে ৬০০ কুইন্টাল গম উৎপাদন করেন। এখানে গড়ে শ্রমিকপ্রতি ৬০ কুইন্টাল গম উৎপাদন হয়। শ্রমিকপ্রতি এই ৬০ কুইন্টাল গম উৎপাদনকে গড় উৎপাদন বলে। পরের মৌসুমে ১১ জন শ্রমিক নিয়োগ করে ৬৫৫ কুইন্টাল গম উৎপাদন হয়। এখানে গত বছরের তুলনায় উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ৫৫ কুইন্টাল। এই (৬৫৫-৬০০) = ৫৫ কুইন্টাল গম উৎপাদনকে প্রান্তিক উৎপাদন বলে। অর্থাৎ অতিরিক্ত একজন (১১তম) শ্রমিক নিয়োগ করায় উৎপাদন বাড়ল ৫৫ কুইন্টাল। ১১তম শ্রমিক হলো প্রান্তিক শ্রমিক। সুতরাং প্রান্তিক শ্রমিকের উৎপাদন হলো ৫৫ কুইন্টাল। তাহলে এখানে ৬০০ কুইন্টাল হচ্ছে মোট উৎপাদন, ৬০ কুইন্টাল হচ্ছে গড় উৎপাদন এবং ৫৫ কুইন্টাল হচ্ছে প্রান্তিক উৎপাদন।



১৫।    গড় উৎপাদন বলতে কী বোঝায়?

            উত্তর : মোট উৎপাদনের পরিমাণকে মোট উপকরণ দ্বারা ভাগ করলে গড়  উৎপাদন পাওয়া যায়।

            যেমন—কমল বাবু তাঁর এক বিঘা জমিতে ১০ জন শ্রমিক নিয়োগ করে ৬০০ কুইন্টাল গম উৎপাদন করেন। এখানে গড়ে শ্রমিকপ্রতি ৬০ কুইন্টাল গম উৎপাদন হয়। শ্রমিকপ্রতি এই ৬০ কুইন্টাল গম উৎপাদনকে গড় উৎপাদন বলে।



১৬।    প্রান্তিক উৎপাদন কী?

            উত্তর : এক একক উৎপাদনের উপকরণ পরিবর্তনের (অর্থাৎ শ্রম বা মূলধন) ফলে উৎপাদনের যে পরিবর্তন হয়, তাকে প্রান্তিক উৎপাদন বলে।

            শ্রম ব্যবহার করলে শ্রমের বা মূলধন ব্যবহার করলে মূলধনের প্রান্তিক উৎপাদন বলব। অর্থাৎ উপকরণ বা শ্রমিক নিয়োগের ফলে মোট উৎপাদনের যে পরিবর্তন হয়, তাকে প্রান্তিক উৎপাদন বলে। উদাহরণস্বরূপ, শ্রম উপকরণ ১০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০ হলে মোট উৎপাদন বৃদ্ধি  পেয়ে ১০ থেকে ২২ কুইন্টাল হয়। এখানে প্রান্তিক উৎপাদন হচ্ছে (২২-১০) = ১২ কুইন্টাল।



১৭।     গড় ও প্রান্তিক উৎপাদনের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করো।

            উত্তর : উৎপাদন ব্যবস্থায় গড় উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদনের মধ্যে সম্পর্ক নিম্নরূপ :

            ১. প্রান্তিক উৎপাদন যখন কমতে থাকে, তখন গড় উৎপাদনও কমতে থাকে। এ অবস্থায় গড় উৎপাদন রেখা প্রান্তিক উৎপাদন রেখার ওপরে থাকে।

            ২. গড় উৎপাদন যখন সবচেয়ে বেশি হয়, প্রান্তিক উৎপাদন রেখা তখন গড় উৎপাদন রেখার সর্বোচ্চ বিন্দুকে ছেদ করে। অর্থাৎ গড় উৎপাদনের সর্বোচ্চ বিন্দুতে গড় উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদন সমান হয়।

                     

১৮।   ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি কী?

            উত্তর : উপকরণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন বাড়ার নিয়মকে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি বলে।

            সাধারণত কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে গেলে এই বিধিটি কার্যকর হয়। উল্লেখ্য, প্রথমদিকে উপকরণ বাড়ানোর তুলনায় উৎপাদন বেশি হারে বাড়তে পারে। মনে করি আমাদের ভূমি ও শ্রম দুটি উপকরণ আছে। ভূমির পরিমাণ স্থির। প্রথমে শ্রমের পরিমাণ কম থাকায় প্রান্তিক শ্রম বৃদ্ধি পেলে প্রান্তিক শ্রমের জন্য পর্যাপ্ত ভূমি থাকে। এ কারণে প্রান্তিক শ্রমের বৃদ্ধির চেয়ে প্রান্তিক উৎপাদন বেশি হয়। অর্থাৎ উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ক্রমাগত বেশি পরিমাণ উপকরণ নিয়োগ করতে থাকলে প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমেই কমে। এর কারণ হলো অতিরিক্ত শ্রম নিয়োগ করায় প্রতি একক শ্রমের জন্য ভূমি কম থাকে। ফলে উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়ে। একে বলে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি।



১৯।    আর্থিক উৎপাদন ব্যয় কী?

            উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো একটি দ্রব্য বা সেবা উৎপাদন করতে উৎপাদককে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ব্যবহার করতে হয়। এই উপকরণগুলোর জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয় যেমন—কাঁচামালের জন্য ব্যয়, শ্রমিকের মজুরি, যন্ত্রপাতি, স্থির জমি, ঘর, আসবাবপত্র ইত্যাদি। এসব ব্যয়কে আর্থিক উৎপাদন ব্যয় বলে।



২০।     প্রকৃত উৎপাদন ব্যয় কী?

            উত্তর : প্রকৃত উৎপাদন ব্যয় একটি মানসিক ধারণা, যা টাকার অঙ্কে পরিমাপ করা যায় না। যেমন—নুরু মিয়া ও তাঁর ছেলের ঘুম ও আরাম ত্যাগ; লেখকের বই লেখার সময় আরাম, আনন্দ, বিশ্রাম, ঘুম ত্যাগ। আবার শ্রমিকের শ্রম জোগান দিতে বিশ্রাম ও আরাম ত্যাগ। এ ধরনের ব্যয়কে সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকৃত উৎপাদন ব্যয় বলে।        



২১।     প্রকাশ্য ব্যয় কী?

            উত্তর : কোনো উৎপাদনী প্রতিষ্ঠান ভাড়া বা উপকরণ ক্রয়ের জন্য দৃশ্যমান যে ব্যয় করে, এদের সমষ্টিকে প্রকাশ্য ব্যয় বলে। যেমন—উৎপাদনী প্রতিষ্ঠান বা ফার্মে কর্মরত মানুষের বেতন ও ভাতাদি, কাঁচামাল, মাধ্যমিক দ্রব্য ক্রয়ের জন্য ব্যয়, বিভিন্ন ধরনের স্থির ব্যয় যেমন—বাড়িভাড়া, মূলধনের সুদ ইত্যাদি।



২২।     অপ্রকাশ্য ব্যয় কী?

            উত্তর : অপ্রকাশ্য ব্যয় বলতে উদ্যোক্তার নিজের শ্রমের মূল্য ও অন্যান্য ব্যয়, স্বনিয়োজিত সম্পদের খরচ যেমন—নিজের বাড়িতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কারখানা স্থাপন, অফিস বানানো ইত্যাদি প্রকাশ করে। এ ধরনের ব্যয় ফার্মের হিসাব বইয়ে থাকে না। যেমন—ব্যক্তিমালিকানাধীন ফার্মের ক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজের বেতন পৃথকভাবে হিসাব না করে মুনাফাকে তার সেবার পারিশ্রমিক হিসাবে গণনা করে। এ ক্ষেত্রে মালিকের যেকোনো রকমের ভাতাদি অপ্রকাশ্য ব্যয় হিসাবে গণ্য হয়।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »