বিজ্ঞান
২০১৬ সালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার প্রস্তুতি : পর্বসংখ্যা-৫৩
তৃতীয় অধ্যায় : ব্যাপন, অভিস্রবণ ও প্রস্বেদন
সুনির্মল চন্দ্র বসু সহকারী অধ্যাপক, মুজিব ডিগ্রি কলেজ, কাদেরনগর, সখীপুর, টাঙ্গাইল
সুপ্রিয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ তোমাদের বিজ্ঞান বিষয়ের ‘তৃতীয় অধ্যায় : ব্যাপন, অভিস্রবণ ও প্রস্বেদন’ থেকে একটি নমুনা সৃজনশীল প্রশ্ন ও তার উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো।
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
অহনা বিকেলবেলা তাদের টবের পেয়ারা গাছে পানি দিতে গিয়ে একটি পেয়ারা পাতাসহ পলিথিন দিয়ে বেঁধে রাখল। পর দিন সকালে দেখতে পেল পলিথিনের মধ্যে বিন্দু বিন্দু পানি জমেছে।
ক. অভিস্রবণ কাকে বলে? ১
খ. ইমবাইবিশন বলতে কী বুঝায়? ২
গ. অহনাদের পেয়ারাগাছটি যে প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করেছে তার বর্ণনা দাও। ৩
ঘ. পলিথিনের ভেতরে যে প্রক্রিয়ায় পানি জমেছে উদ্ভিদের জীবনে তার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো। ৪
উত্তর ক. একই দ্রাবক বিশিষ্ট দু’টি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা পৃথক থাকলে যে ভৌত প্রক্রিয়ায় দ্রাবক কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে অধিক ঘনত্বের দ্রবণের দিকে ব্যাপিত হয় তাকে অভিস্রবণ বলে।
খ. যে প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ নানা ধরনের তরল পদার্থ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি) শোষণ করে তাকে ইমবাইবিশন বলে। উদ্ভিদদেহে বিভিন্ন ধরনের কলয়েডধর্মী পদার্থ বিদ্যমান। যথা স্টার্চ, সেলুলোজ, জিলেটিন ইত্যাদি। এসব পদার্থ তাদের কলয়েডধর্মী গুণের জন্যই পানি শোষণ করতে সক্ষম।
গ. অহনাদের পেয়ারাগাছটি অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করেছে।
প্রক্রিয়ার বর্ণনা নি¤œরূপ : মূলরোমের প্রাচীরটি ভেদ্য, তাই প্রথমে ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি শোষণ করে এবং কোষ প্রাচীরের নিচে অবস্থিত অর্ধভেদ্য প্লাজমা পর্দার সংস্পর্শে আসে। মূলরোমের কোষীয় দ্রবণের ঘনত্বের তুলনায় তার পরিবেশের দ্রবণের ঘনত্ব কম থাকায় পানি (দ্রাবক) কোষের মধ্যে অন্তঃঅভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে। মূলের বাইরের আবরণ থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সব কোষের কোষ রসের ঘনত্ব সমান নয়। ফলে কোষান্তর অভিস্রবণের কারণে মূলের এক কোষ থেকে অন্য কোষে পানির গতি অব্যাহত থাকে এবং পরিশেষে পানি কাণ্ডের জাইলেম বাহিকার মাধ্যমে পাতায় পৌঁছায়।
ঘ. পলিথিনে সংঘটিত প্রক্রিয়াটি হলো প্রস্বেদন। উদ্ভিদ জীবনে প্রস্বেদন একটি অনিবার্য প্রক্রিয়া। এর গুরুত্ব নি¤œরূপ :
১. প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদ তার দেহ থেকে পানি বের করে অতিরিক্ত পানির চাপ থেকে মুক্ত করে।
২. প্রস্বেদনের ফলে কোষ রসের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। কোষ রসের ঘনত্ব বৃদ্ধি অন্তঃঅভিস্রবণ সহায়ক হয়ে উদ্ভিদকে পানি ও খনিজ লবণ শোষণে সাহায্য করে।
৩. প্রস্বেদন প্রক্রিয়া উদ্ভিদ দেহকে ঠাণ্ডা রাখে এবং পাতার আর্দ্রতা বজায় রাখে।
৪. প্রস্বেদনের ফলে খাদ্য তৈরির জন্য অবিরাম পানি সরবরাহ সম্ভব হয়।
৫. পাতায় প্রস্বেদনের ফলে জাইলেম বাহিকার পানির যে টান সৃষ্টি হয় তা মূলরোম কর্তৃক পানি শোষণে উদ্ভিদের শীর্ষে পরিবহনে সাহয্য করে।
৬. পানি চক্রে বাষ্পীভবনে প্রস্বেদন ভূমিকা রাখে।
৭. প্রস্বেদনের ফলে প্রচুর পানি বাষ্পাকারে বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায়।