তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
কর্মসংস্থান
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হ্রাস করতেই শুধু সহযোগিতা করেনি বরঞ্চ কর্মীদের আরো বেশি কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। একজন কর্মীর কাজের সুযোগ এখন কেবল তার ভৌগোলিক অবস্থানেই সীমাবদ্ধ নেই। ওয়েবের মাধ্যমে সে সহজেই খুঁজে নিতে পারছে তার কাজ। যেমন বাংলাদেশের bdjobs.com থেকে যেকেউ খুঁজে পেতে পারেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। যা আগে খবরের কাগজ কাটা কিংবা ফটোকপি করা ছাড়া সম্ভব ছিল না। এখন কোনো কাজের জন্য আর কোনো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ধরনা দিতে হয় না। ঘরে বসেই বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কাজের খবর পাওয়া যায় এবং যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ খুঁজে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়া তথ্য প্রযুক্তি উদ্ভবের ফলে সৃষ্টি হয়েছে আরো অনেক প্রযুক্তিনির্ভর কর্মের। কোনো অফিস আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন কর্মী ছাড়া চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে মানুষের সামনে কর্মসংস্থানের অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। যেকোনো ব্যক্তি ঘরে বসেই তার দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মের সংস্থান করতে পারে। ইন্টারনেট এখন মানুষের কর্মসংস্থানের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিং কাজের কথা সকলেরই জানা মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সাররা আউটসোর্সিংকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নিজেদের এবং দেশের ভাগ্য পরিবর্তনে তাত্পর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা ইতোমধ্যেই তাদের দক্ষতা দিয়ে আউটসোর্সিংয়ে বিশ্বে প্রথম সারিতে স্থান করে নিয়েছেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পৃথিবীর মানুষের সামনে নতুন রূপে উদ্ভাসিত হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা গ্রহণের পদ্ধতিকে সহজ, উন্নত, আকর্ষণীয়, সার্বজনীন এবং ব্যয় সাশ্রয়ী করেছে। অনলাইন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করেছে। ডিজিটাল লাইব্রেরি থেকে ঘরে বসেই ই-বুক সংগ্রহের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষালয়গুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের ফলে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরীক্ষা ব্যবস্থাপনাকে কম্পিউটারাইজড করার ফলে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল প্রকাশ দ্রুততম সময়ে এবং সফলভাবে প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে যাবতীয় কাজ প্রদান করা যাচ্ছে। এক কথায় বলা যায়, প্রযুক্তির কল্যাণে সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা আমূল পরিবর্তন হয়েছে।
দূর শিক্ষণ ব্যবস্থাকে আরো অর্থপূর্ণরূপ দিচ্ছে তথ্য প্রযুক্তি। শিক্ষার্থী ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে পারছে। সুবিধাজনক সময়ে ক্লাস করতে পারছে পরীক্ষা দিতে পারছে এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও ডিগ্রি অর্জন করতে পারছে। শিক্ষকগণ যে কোনো সময় ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগিতা করতে পারছেন। বাংলাদেশের সালমান খান প্রযুক্তিনির্ভর সার্বজনীন শিক্ষায় একটি রোল মডেল হয়ে উঠেছে। ইউটিউবে তার শিক্ষামূলক ভিডিও দেখে সারা বিশ্বের কোটি কোটি ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিনই শিখছে। একজন মানুষের পক্ষে এত মানুষকে শেখানো এর আগে কখনো সম্ভব হয়নি। এতে সালমানের কৃতিত্বের সাথে সাথে তথ্য প্রযুক্তির শিক্ষা ক্ষেত্রে যে বিশাল এবং কার্যকর ভূমিকা রয়েছে তা প্রমাণ করে। সালমান খান বর্তমানে khanacademy.org নামক একটি ওয়েব সাইটের মাধ্যমে তার কার্যক্রমকে আরো বিস্তৃত রূপ দিচ্ছেন।