প্রাণির পরিচিতি: হাইড্রা
Hydra মুক্তজীবি, মিঠাপানিতে নিমজ্জিত কঠিন বা জলজ উদ্ভিদের পাতার নিচের তলে সংযুক্ত হয়ে নিম্নমুখী হয়ে ঝুলে থাকে।
* মাংসাশী, খাদ্যগ্রহণ- কর্ষিকার সাহায্যে
* চলাফেরা-সংকোচন প্রসারণ ও কর্ষিকার সাহায্যে
* ব্যাপন ও রেচন: দেহপ্রাচীরে মাধ্যমে ব্যাপন প্রক্রিয়ায়।
* জনন: মুকোলোদগম ও দ্বিবিভাজনের মাধ্যমে অযৌন জনন এবং জনন কোষ সৃষ্টি করে যৌন-জনন সম্পন্ন করে।
* Hydra দেহ নরম, নলাকার, অরীয় প্রতিসাম্য, লম্বা: ১০-৩০ মি.মি, চওড়া: প্রায় ১ মি.মি; Hydra র পুনরুত্পত্তি ক্ষমতা প্রচন্ড
বহির্গঠন: ৩টি অংশে ভাগ করা যায়-
1. হাইপোস্টোম- মুখছিদ্র অবস্থিত, খাদ্যগ্রহণ ও অপ্রাচ্য অংশ বহিষ্কৃত হয়।
2. দেহকান্ড-সংকোচন প্রসারণশীল
কর্ষিকা: বহি:প্রাচীরে টিউমারের মত নেমাটোসিস্ট ব্যাটারী থাকে, প্রতিটি ব্যাটারিতে থাকে বিভিন্ন ধরনের নেমাটোসিস্ট, কর্ষিকা ও নেমাটোসিস্ট পারষ্পরিক সহযোগীতায় আহার সংগ্রহন, চলন ও আত্মরক্ষায় অংশ নেয়,
Hydra fusca-6 টি কর্ষিকা Hydra viridiss:4-8 টি Hydra vulgaris:6-10 টি কর্ষিকা মুকুল-মুকোলোগম করে।
জননাঙ্গ:
অস্থায়ী জননাঙ্গ, উপরের অধাংশে এক বা একাধিক কোণাকার শুক্রাশয়, নিচের অর্ধাংশে এক বা একাধিক গোলাকার ডিম্বাশয়।
৩. পাদচাকতি: নি:সৃত আঠালো রসের সাহায্যে তলের সাথে লেগে থাকে, বুদবুদ সৃষ্টি করে ভাসিয়ে রাখে, ক্ষনপদ গঠনকারী কোষের সাহায্যে গ্লাইডিং চলন সম্পন্ন হয়।
অন্তর্গঠন: Hydra র দেহপ্রাচীর মূলত দেহপ্রাচীর (Body wall) ও কেন্দ্রীয় গ্যাস্টোভাস্কুলার গহ্বর (coelenteron) নিয়ে গঠিত, Hydra দ্বিভ্রুণস্তরী প্রাণী, ভ্রূণাবস্থায় অ্যাক্টোডার্ম ও এন্ডোডার্ম নামক নির্দিষ্ট স্তরে বিন্যস্ত।পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে স্তরদুটি এপিডার্মিস ও গ্যাস্ট্রোডার্মিস এ পরিণত হয়। দুই স্তরের মাঝে অকোষীয় মেসোগ্লিয়া।
এপিডার্মিস (বহি:ত্বক)
পাতলা ও নমনীয় কিউটিকল এ আবৃত। ৭ ধরনের কোষ-
1.পেশী-আবরণী কোষ- চওড়াপ্রান্ত মিউকাসযুক্ত, ভেতরের সরুপ্রান্তের শেষে মায়োনিম নির্মিত দুটি পেশী প্রবর্ধন,
২.ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ- প্রয়োজনে অন্য যে কোন ধরনের বহি:ত্বকীয় কোষে পরিণত হয়, মুকুল সৃষ্টি, পুরানো কোষের স্থান পূরণ।
৩.স্নায়ু কোষ- স্নায়ু উদ্দীপনা বহন করে।
৪.সংবেদীকোষ- সংবেদীরোম বেরোয়, পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ (আলো,তাপ) করে স্নায়ুকোষে পৌছায়,
৫.গ্রন্থি কোষ- লম্বাটে, পদতলে ও মুখাছিদ্রের চারদিকে অবস্থিত। মিউকাস ক্ষরণ লেগে থাকতে, বুদবুদ সৃষ্টি করে ভাসতে, ক্ষনপদ সৃষ্টি করে চলান। মুখছিদ্রের গ্রন্থিকোষের ক্ষরণ-খাদ্য গলাধ:করণে সাহায্য করে।
৬. জননকোষ
৭.নিডোসাইট- কোষের মুক্তপ্রান্তে নিজোসিল, অভ্যন্তরে নেমাটোসিস্ট থাকে, গহ্বরটি অপারকুলাম দিয়ে ঢাকা থাকে। নেমাটোসিস্ট এর গহ্বর হিপনোটক্সিন নামক বিষাক্ত রস এ পূর্ণ, পরিষ্ফুটনরত নিডোসাইটকে নিডোব্লাষ্ট বলে। নিডোসাইটের নেমাটোসিস্ট খাদ্যগ্রহণ, চলন ও আত্মরক্ষায় ব্যবহূত হয়। হিপনোটক্সিন প্রোটিন ও ফেনলে গঠিত।
বিজ্ঞানী ভার্নার নিডরিয়া জাতীয় প্রাণীদের দেহে ২৩ ধরনের নেমাটোসিস্ট শনাক্ত করেছেন। ৪ ধরনের নেমাটোসিস্ট Hydra তে পাওয়া যায়: ১. স্টিনোটিল/পেনিট্রেন্ট ২. ভলভেন্ট ৩. স্ট্রেপটোলিন গ্লুটিন্যাণ্ট ৪. স্টেরিওলিন গ্লুটিন্যাণ্ট।
EmoticonEmoticon