দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, শুভেচ্ছা নিও। আজ আমি তোমাদের জীববিজ্ঞান ১ম পত্রের ১২ অধ্যায়ের জীব প্রযুক্তি-বিষয়ের ওপর সৃজনশীল প্রশ্নোওর উপস্থাপন করব,

সৃজনশীল প্রশ্ন ঃ শিক্ষার্থীরা ক্লাসে জানতে পারলো যে, বীজ ছাড়াও উদ্ভিদের অন্যান্য সজীব অংশ থেকে পুরোপুরি রোগ-জীবাণু মুক্ত মাতৃ বৈশিষ্ট্য সম্বলিত অসংখ্য চারা তৈরি সম্ভব। এমনকি এ প্রক্রিয়াতে কৃষি জমিরও প্রয়োজন নেই।

(ক) ইকোলজিক্যাল পিরামিড কী ?                   ১

(খ) ইন-সিটু সংরক্ষণ বলতে কী বুঝ ?              ২

(গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত চারা গাছ উত্পাদনের কৌশল বর্ণনা কর।                                            ৩

(ঘ) উক্ত প্রক্রিয়ার সাথে সাধারণ চারা উত্পাদন পদ্ধতির পার্থক্য দেখাও।                                 ৪


সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ঃ

(ক) উত্তর ঃ ইকোলজিক্যাল পিরামিড ঃ খাদ্য জালকের খাদ্য বিন্যাসসম্বলিত পিরামিড আকৃতির ছককে ইকোলজিক্যাল পিরামিড বলে।

(খ) ইন-সিটু ঃ ইন-সিটু সংরক্ষণ বলতে কোন প্রজাতির অর্থাত্ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাস্তুতন্ত্র বা প্রকৃতির বসতির সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক পারিপার্শ্বিকতায় টিকে থাকার মতো জনগোষ্ঠীর পুণরুদ্ধার বা রক্ষণকে বুঝি। সাধারণতঃ বিপন্ন প্রজাতিকে সংরক্ষণে এ পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রয়োগ করা হয়। বৈশ্বিক সংরক্ষণ নীতিতে ইন-সিটু সংরক্ষণ সর্বাধিক অগ্রাধিকারযোগ্যও বটে।

(গ) উত্তর ঃ উদ্দীপকে উল্লেখিত চারা উত্পাদন পদ্ধতিটি হলো টিস্যু ক্যালচার পদ্ধতি। এ পদ্ধতির কৌশল হলো-

১. প্রথমে কালচার পিরামিড তৈরি।

২. মিডিয়াম তৈরি সম্পন্ন হলে একে টেস্টটিউব অথবা ফ্লাস্কে ঢালা হয় এবং তুলার ছিপি দ্বারা মুখ বন্ধ করে জীবাণুমুক্ত করার জন্য অটোক্লেভ করা হয়।

৩. জীবাণুমুক্ত মিডিয়ামের মুখ খুলে অতি সতর্কতার সহিত এক্রপ্লান্টকে মিডিয়ামের উপর স্থাপন করতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে তার মুখ বন্ধ করে রাখা হয়।

৪. পরবর্তীতে এগুলোকে নিয়ন্ত্রিত আলো ও তাপমাত্রার কক্ষে রাখা হয়। কিছুদিনের মধ্যে মিডিয়ামের সংস্পর্শে থাকা এক্রপ্লান্টের টিস্যুগুলো বিভাজিত হয়ে প্রথমে ক্যালাস ও পরে ক্যালাস থেকে শিশু বিটপ তৈরি হয়।

৫. বিটপগুলো বড় হলে এদের কেটে মূল উত্পাদনকারী নতুন মিডিয়ামে স্থাপন করা হয়।

৬. সুগঠিত মূল তৈরি হওয়ার পর চারা গাছগুলোকে মিডিয়াম থেকে সতর্কতার সাথে সরিয়ে নিয়ে পানিতে মূলগুলোকে ভালোভাবে ধুতে হবে। পরবর্তীতে এই চারাগুলোকে সাবধানতার সহিত ছোট মাটির পাত্রে বা পলিব্যাগের মাটিতে স্থানান্তর করা হয়। সবশেষে মাটির পাত্র ও পলিব্যাগ থেকে চারাগুলোকে মাঠে স্থানান্তর করা হয়।

(ঘ) উত্তর ঃ বীজ ছাড়াও উদ্ভিদের অন্যান্য সজীব অঙ্গ থেকে শতভাগ জীবাণুমুক্ত যে চারা তৈরি পদ্ধতি সম্পর্কে ছাত্ররা জানতে পারলো তা হলো টিস্যু ক্যালচার পদ্ধতি। সাধারণতঃ চারা উত্পাদন পদ্ধতির সাথে টিস্যু ক্যালচার পদ্ধতির পার্থক্য নিচে উল্লেখ করা হলো-

১. টিস্যু ক্যালচারের মাধ্যমে রোগমুক্ত চারা তৈরি কার সম্ভব, যা সাধারণ পদ্ধতিতে সম্ভব নয়।

২. টিস্যু ক্যালচারের মাধ্যমে অল্প সময়ে অধিক সংখ্যক চারা তৈরি সম্ভব হলেও সাধারণ পদ্ধতিতে তা সম্ভব নয়।

৩. টিস্যু ক্যালচার পদ্ধতির মাধ্যমে ল্যাবরেটরীতে বছরের সব সময় সুস্থ সবল উদ্ভিদ চারা তৈরি করা সম্ভব, কিন্তু বীজের মাধ্যমে বা অন্য কোন পদ্ধতিতে উদ্ভিদ চারা তৈরির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

৪. টিস্যু ক্যালচারের মাধ্যমে অল্প জায়গায় বহু সংখ্যক উদ্ভিদ চারা তৈরি সম্ভব, যা সাধারণ পদ্ধতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

অবশ্য তাই বলাই যায় যে, টিস্যু ক্যালচার পদ্ধতির সাথে সাধারণ চারা উত্পাদনের পদ্ধতির যথেষ্ট অমিল বিদ্যমান।

অলোক কুমার মিস্ত্রী,
জীববিজ্ঞান বিভাগ
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ, পিরোজপুর।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »